শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
ঐতিহাসিক গণঅভূত্থানের ১’ম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পটুয়াখালী সদর উপজেলা শ্রমিক দলের বিজয় মিছিল বাউফলে টাইফয়েড প্রতিরোধ টিকাদান ২০২৫ প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত আত্মগোপনকারী ও বাবার শত্রুর মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে স্কুলছাত্রী মরিয়ম হ/ত্যা/কারী কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এলো ট্রলারসহ নিখোঁজ ১ জেলের মরদেহ সভানেত্রী লিলি, সম্পাদিকা নার্গিস।। কলাপাড়া উপজেলা ও পৌর মহিলা দলের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ডাকাতিসহ একাধিক মামলার আসামী শহিদ ফকির গ্রেফতার কুয়াকাটায় নারী কৃষকদের দুইদিন ব্যাপী উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মশালা বাউফলে কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় নেতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার নির্বাচনের আগে লটারির মাধ্যমে এসপি-ওসিদের বদলি হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশনকে  চিঠি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বরিশাল কালচারাল অফিসার অসিতের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের তদন্ত শুরু কলাপাড়া থানা পুলিশ’র ‘ওপেন হাউজ ডে’ অনুষ্ঠিত বাউফলে সাংবাদিকদের সাথে কৃষকদলের কেন্দ্রীয় নেতার মতবিনিময় কুয়াকাটা সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার আমাদের পালাবার যায়গা নেই।।তাই জনগণের স্বার্থবিরোধী কিছু করা যাবেনা…. এবিএম মোশাররফ হোসেন
শারিরীক নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাসা থেকে পালিয়ে বেচেছেন এক গৃহকর্মী

শারিরীক নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাসা থেকে পালিয়ে বেচেছেন এক গৃহকর্মী

Sharing is caring!

শারিরীক নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাসা থেকে পালিয়ে বেচেছেন এক গৃহকর্মী। বছরের পর বছর গৃহকর্মী হিসেবে আটকে রেখে নির্যাতন বরেছে বলে অভিযোগ করেছে নির্যাতনের শিকার কিশোরী মিম (১৫)। পালিয়ে যাওয়ার পর শুক্রবার সকালে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২৯ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বাঘিয়া শাহপরান সড়কের কবির হাওলাদারের বাড়ি থেকে ওই গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার ওই গৃহকর্মী বাসা থেকে পালিয়ে এক রিক্সা চালকের সাহায্য চান। এরপর রিক্সাচালক ওই কিশোরীকে তার বাড়িতে আশ্রয় দিলে, থানা পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে তাকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।
উদ্ধারের সময় মিম নামের ওই গৃহপরিচারিকার বর্ণনা অনুযায়ী, বরিশাল নগরের কলেজ রো এলাকায় হাকিমুল ইসলাম এর বাসায় সে কাজ করতো। হাকিমুল ইসলাম বরিশাল নগরের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ক্যামিস্ট ল্যাবরেটরীজের চীফ অপারেশন এ্যাডমিস্টেটর পদে কর্মরত আছেন।
গৃহপরিচারিকা মিম জানায়, তার চাচা স্বপন ঢাকায় থাকতে আকিমুল ইসলাম বাড়িতে কাজে দেয়। আকিমুলের বাড়ি রাজশাহী হলেও বর্তমান চাকুরির সুবাদে স্ত্রী শিমু ও দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে বরিশাল নগরের কলেজ রো এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি ও তার স্ত্রী মিমকে কখনোই ঠিকভাবে খেতে দিতো না। মারধর করা হতো। কাজের জন্য নির্ধারিত সময় বেঁধে দেয়া হতো, না পারলে চালানো হতো নির্যাতন।
নির্যাতনের শিকার মিম বলেন, আমি যতটুকু কাজ পারি ততটুকু তো করি। আমি তো কোন মেশিন না যে তারাতারি সব কাজ করমু, আমি তো মানুষ কিন্তু আমার সাথে জানোয়ারের মতো ব্যবহার করা হতো। নিজেদের ৭ ও ৩ বছরের দুটি শিশু সন্তান রয়েছে, কিন্তু তাদের সাথে তো ওইরকম ব্যবহার করার সাহস পায় না। ওনারা আমারে বেলন দিয়ে বাড়ি মারে, লোহার ইয়া (ছেকনি/ খুনতি) দিয়া মারে, আর চর-থাপ্পর তো আছেই। এমনভাবে মারে যে পরে আমি উইঠা আর কাজ করতে পারি না।
মিম আরো বলেন, এককাজ চৌদ্দবার করাতো। কাজে দেরি হলেই হাটু ও মাজার মধ্যে মারতো। পঁচা বাসি খাবার খাওয়াতো। আবার খাওয়ার জন্যও সময় বেধে দিতো। ওনাদের মারধরের কারনে আর একটা মেয়ে ছিলো সে চলে গেছে।সকিভাবে ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে এমন প্রশ্নের জবাবে মীম বলেন, বাসার গেট খোলা পেয়ে বের হয়ে হাটতে হাটতে বিএম কলেজের সামনে চলে আসি। কিন্তু এখানকার কিছু না চেনায় একজন মহিলার সাহায্য চাই। তখন ওই আন্টিকে খ্রিষ্টান কলোনীতে দিয়ে আসার অনুরোধ জানাই। তখন ওই আন্টি রিক্সা চালক আরিফ ভাইকে খ্রিষ্টান কলোনীতে দিয়ে আসতে বললে আমি এখানে আসি।
নগরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিপুর দক্ষিন বাঘিয়া এলাকায় কবির হাওলাদারের বাড়ির ভাড়াটিয়া ও রিকশা চালক আরিফ মোল্লা বলেন, বিএম কলেজের সামনে থেকে যাওয়ার সময় এক মহিলা আমাকে সিগন্যাল দেয়। এরপর এই মেয়েটিকে বাঁচানোর কথা বলে এবং মেয়েটিও ভাই বলে ডাক দিয়ে সাহায্যের আকুতি জানায়। এরপর তাকে নিয়ে হাজেরা খাতুন স্কুলের সামনে এসে চা-রুটি খাওয়াই। তারপর সে ভাত খেতে চাইলে বাসায় নিয়ে আসি। পরবর্তীতে সে খ্রিষ্টান কলোনীতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে, তবে না জেনে আমি কোথায় নিবো এই চিন্তায় বাসায় স্ত্রীর কাছেই রাখি মেয়েটিকে।
আরিফের স্ত্রী হাফিজা জানায়, আমি কাজ থেকে বাড়িতে আসছি আর তার স্বামীও ওই মেয়েটিকে নিয়ে বাসায় আসে। তখন ওই মেয়েটির কাপর-চোপর খুব নোংড়া ছিলো, যার কারনে আমার কাছে থাকা কাপর তাকে পরতে দেই এবং খেতে দেই। খাওয়া শেষে বিশ্রাম নেয় এরপর তাকে জিজ্ঞাসা করতে জানায় তাকে এক বাসায় কাজের জন্য নির্যাতন করা হতো। সবসময় তারা দিয়ে রাখা হতো, সুযোগ পেয়ে সেখান থেকে সে পালিয়ে এসেছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত আকিমুল ইসলাম এসব অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, মিমকে কোন ধরনের নির্যাতন করা হয়নি। গাজিপুরে চাকুরীকালিন সময়ে এক লোকের মাধ্যমে মিমকে তিনি পেয়েছেন। আর বরিশালে মাত্র ৩ মাস হয়েছে তিনি এসেছেন, সব মিলিয়ে ৬-৭ মাস হতে পারে মিম তাদের সাথে আছেন। মিমের মানসিক সমস্যা রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, মিম তার বাড়ির ঠিকানাই বলতে পারেনা। আমরাও অনেক চেষ্টা করেছি তার বাড়িতে যোগাযোগ করার জন্য।
তবে গতকাল হারিয়ে যাওয়া বা আগে থেকে তার পরিবারের সন্ধান না পাওয়ার বিষয়ে তিনি থানা পুলিশের স্মরনাপন্ন্য হয়নি।
২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ আহম্মেদ বলেন, রিক্সাচালক আরিফের বাড়ির মালিকের কাছ থেকে খবর পেয়ে থানা পুলিশ সহ আমরা এখানে এসেছি। এখন নির্যাতনের শিকার ওই মেয়েটি যাতে ভালো থাকে সেই চেষ্টা আমরা করবো। আর নির্যাতনকারীদের উচিত আইনের আওতায় আনা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার এস আই মো. শাহজালাল কবির জানান, বিমানবন্দর থানা পুলিশ মিমকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। গৃহপরিচারিকা মিমকে কোতোয়ালি মডের থানার ভিকটিম সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেয়েটি তার বাড়ির ঠিকানা ঠাকুরগাও এ বলে জানায়। ঠাকুরগাও সদর থেকে গাড়িতে ১ শত টাকা পথের দুরত্বে তুলশী পুকুর এলাকায়। তার পিতা অরেন,আর মাতার নাম আনিকা বলে জানায়।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD